নিজের মামলায় ফেঁসে গেছেন ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কনক কান্তি দাসের ব্যক্তিগত ড্রাইভার বিশ্বজিৎ শর্মা। নাটক সাজিয়ে অন্যকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই পুলিশের জালে জড়িয়ে গ্রেফতার হয়েছেন। এ ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশ। গ্রেফতারের পর বিশ্বজিতের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে অবৈধ পিস্তল। .
এই পিস্তল দিয়েই তিনি নিজেকে নিজে গুলি করেন। প্রথমে বিশ্বজিৎতের উপর হামলার কথা প্রচার করা হলেও পুলিশের তদন্তে কেঁচো খুড়তে সাপ বেরিয়ে আসে। এখন নিজেই আসামি হয়ে কারাগারে বন্দি বিশ্বজিৎ শর্মা। অভিযোগ পাওয়া গেছে, বিশ্বজিৎ শর্মা মাদক ও স্বর্ণ চোরাচালানের সাথে জড়িত। প্রচার রয়েছে বড় ধরণের চালান গায়েব করতেই তিনি এই নাটক মঞ্চস্থ করেন। .
অনেকে বলছেন তার পার্টনারকে ফাঁসাতে এই কান্ড ঘটনান বিশ্বজিৎ । কিন্তু পুলিশ তার জারিজুরি ধরে ফেলেন। জানা গেছে, গত ৩ ডিসেম্বর বিশ্বকাপের খেলা দেখে ফেরার পথে গুলিতে আহত হন বিশ্বজিৎ। রাতেই তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গুরুতর না হলেও বিশ্বজিতের পীড়াপীড়িতে তাকে ঢাকায় রেফার করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। .
ঘটনার তিনদিন পর ৬ ডিসেম্বর তার বন্ধু রাসেলের মাধ্যমে ঝিনাইদহ সদর থানায় মামলা করেন বিশ্বজিৎ শর্মা। মামালায় অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত হন সদর পৌর ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক কামরুজ্জামান। ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসে। বিশ্বজিৎকে যে পিস্তল দিয়ে গুলি করা হয় সেই পিস্তল উদ্ধার হয় তার বাড়ির চালের ড্রামের মধ্য থেকে। .
বিশ্বজিৎ শর্মা ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নের ধোপাবিলা গ্রামের মৃত জয়গোপাল শর্মার ছেলে। বর্তমান তিনি ঝিনাইদহ শহরের হামদহ কাঞ্চনপুর এলাকার গৌতম দাসের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। মামলার এজাহারে বিশ্বজিৎ শর্মা উল্লেখ করেছিলেন অজ্ঞাত ৪/৫ জন এসে তাকে জাপটিয়ে ধরে হত্যার উদ্দেশ্যে পেটের বাম পাশে গুলি করেন। .
পুলিশের একটি সুত্র জানায়, গত ১৭ ডিসেম্বর চিকিৎসা শেষে ভাড়া বাড়িতে ফিরলে তদন্তের স্বর্থে বিশ^জিৎকে নিবিড় ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে বিশ্বজিৎ স্বীকার করেন পারিবারিক কলহের কারণে তিনি গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন। বিশ্বজিৎ পুলিশকে আরো জানান, নিজেকে নিজে গুলির পর পিস্তরটি চালের ড্রামের লুকিয়ে রাখেন।.
এদিকে পুলিশ পরিদর্শক কামরুজ্জামান জানান, এই মামলার মোটিভ ও ক্লু উদ্ধারের পর বিশ^জিতের বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ সদর থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা করা হয়, যার মামলা নং ৩০, তারিখ ১৮/১২/২২ইং। তিনি বলেন, দোষ স্বীকার করে বিশ্বজিৎ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তদন্তের স্বার্থে এখনই সব বলা যাচ্ছে না। ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শেখ মোঃ সোহেল রানা বলেন, থানায় জিজ্ঞাসাবাদের পর বিশ্বজিৎ শর্মা অস্ত্র লুকানোর কথা স্বীকার করেন।.
তার বলা তথ্যমতে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। তিনি বলেন, বিশ্বজিৎতের নামে মাদক ও নারী ঘটিত বেশ কিছু অভিযোগ ছিল। আমরা সেই সূত্র ধরে এই ঘটনায় তদন্তে ভিন্ন কিছু আঁচ করি। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে পুলিশের কাছে সব কিছু স্বীকার করেন। . .
ডে-নাইট-নিউজ / ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
আপনার মতামত লিখুন: